পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি সহ চারজনের বিরুদ্ধে আত্মহত‍্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা রুজু

29th February 2020 বর্ধমান
পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি সহ চারজনের বিরুদ্ধে আত্মহত‍্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা রুজু


যুবককে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেবার  ধরায় পূর্ব বর্ধমানের জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে পুলিশকে তদন্তের  নির্দেশ দিল বর্ধমান আদালত ।যুবকের  মায়ের দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে   বর্ধমান সিজেএম আদালত খণ্ডঘোষ থানার ওসিকে এই নির্দেশ দিয়েছে । আদালতের এই নির্দেশ ঘিরে শোরগোল পড়েগেছে জেলার রাজনৈতিক  মহলে । খণ্ডঘোষ থানার ওসি প্রশেনজিৎ দত্ত জানিয়েছেন , আদালত নির্দেশ দিলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে । খণ্ডঘোষ থানার দুবরাজহাট গ্রামে বসবাস করেন আত্মঘাতী যুবক পবিত্র কুমার সরকার এর পরিবার । ছেলের মৃত্যুর  সুবিচার চেয়ে বর্ধমান আদালতে  মামলা দায়ের করেছেন যুবকের মা  কল্পনা দেবী । আদালতে তিনি  জানিয়েছেন, তাঁর  মেধাবী ছেলে পবিত্র আইটিআই পাশ করার পর একটি নামি বেসরকারী সংস্থায় চাকরির নিয়োগপত্র পায়। কিন্তু ছেলের সঙ্গে সভাধিপতির ভাব-ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। ছেলেকে এ রাজ্যে চাকরি করে দেওয়ার আশ্বাস দেন  সভাধিপতি ।সেই আশ্বাসে ছেলে বেসরকারি সংস্থায় চাকরি ছেড়ে দেয়। পরে সভাধিপতি শম্পার  সঙ্গে  এক ঠিকাদার ও রায়নার শ্যামসুন্দরের এক তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় ।পবিত্র এই ঘনিষ্টতার  প্রতিবাদ করায়  কাপশিট গ্রামের এক নেতা বাড়িতে এসে  হুমকি দিয়ে যায়। ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় সেই তৃণমূল নেতা ও সভাধিপতি বাড়িতে এসে পবিত্রকে মোবাইলের সমস্ত তথ্য ও কিছু ছবি দিয়ে দেওয়ার জন্য চাপদেয় । বিনিময়ে  ২০ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে বলে তারা ছেলেকে বলে । পবিত্র তা দিতে রাজি না হওয়ায় পরিবারের লোকজনকে তারা গাঁজা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এরপর ১৩ জানুয়ারি জেলা পরিষদ অফিসে পবিত্রকে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে সভাধিপতি, এক ঠিকাদার সহ কয়েকজন পবিত্রকে মারধর করে এবং বিভিন্ন কাগজপত্র দিয়ে দিতে চাপসৃষ্টি করে । পবিত্রর মোবাইল ফোনও ভেঙে দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে এসে পবিত্র কান্নাকাটি করে। রাতে খাওয়া-দাওয়ার পর ঘরে ঢুকে পবিত্র কীটনাশক খেয়ে  নেয় ।পরদিন সকালে ঘরে সংজ্ঞাহীন অবস্থায়   পড়েথাকা পবিত্রকে উদ্ধার করে  বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। কল্পনাদেবী আদালতে আরো  জানিয়েছেন ,তাঁর ছেলের মৃত্যুর দিনেই ওই ঘর থেকে সুসাইড নোট উদ্ধার হয়। সেই সুইসাইড নোটে ছেলে তার মৃত্যুর জন্য  সভাধিপতি, এক ঠিকাদার ও অপর দু’জনকে দায়ী করে গেছে।  মামলাকারীর আইনজীবী স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন ,পবিত্র  মৃত্যুর পরেও তার পরিবারকে বিভিন্ন মহল থেকে  হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। সেই বিষয়ে তারা খণ্ডঘোষ থানা ও এসপিকে জানায় ।কিন্তু কোন ব্যবস্থা গৃহীত না হওয়ায়  বাধ্যহয়ে কল্পনাদেবী তাঁর ছেলের  মৃত্যুর সুবিচার চেয়ে  বর্ধমান আদালতে মামলা করেন । যদিও সভাধিপতি জানিয়েছেন, “আদালতের নির্দেশের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না । তবে সভাধিপতির স্পষ্ট জবাব তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ  মিথ্যা ও পরিকল্পনা করে সাজানো । ”

 

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।